get error get error মেয়েদের স্কুল – Darsemansoor

ইসলামী যিন্দেগী এ্যাপের নতুন আপডেট এসেছে। আমরা যারা মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী, আমরা সবাই ইসলামী যিন্দেগী এ্যাপটি আপডেট করে নেই।

ইসলামী যিন্দেগী এ্যাপ ব্যবহারকারীদের সকলকে জানানো যাচ্ছে যে, অনেক লম্বা সময় ধরে আমাদের ২টি ওয়েবসাইটই হ্যাক হচ্ছিল। ফলে আমাদের ব্যবহারকারীরা ঠিকমতো কিতাব, প্রবন্ধ ডাউনলোড করতে, পড়তে এবং বয়ান ডাউনলোড করতে, শুনতে অসুবিধা বোধ করছিল। এছাড়াও আরো অনেক ধরনের সমস্যা হচ্ছিল। ফলে ব্যবহারকারীদের সুবিধার জন্য এবং হ্যাকারদের থেকে আরো বেশী নিরাপদে থাকার জন্য আমরা আমাদের এ্যাপটি আপডেট করেছি।

আলহামদুলিল্লাহ, বর্তমান আপডেটে অনেক নতুন দীনী প্রয়োজনীয় জিনিস সংযোগ করা হয়েছে যা যে কোন দীনদার ব্যবহারকারীর জন্য আনন্দের বিষয় হবে বলে আশা করি।

যেহেতু আমরা সম্পূর্ণ নতুনভাবে কাজ করেছি তাই এ্যাপটি ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রথম দিকে আপনাদের সমস্যা মনে হতে পারে। কিন্তু পরবর্তীতে তা আগের চেয়ে আরো সহজ মনে হবে ইনশাআল্লাহ। আর আমরা এখন পুরোদমে কাজ করে যাচ্ছি তাই আপনাদের নজরে কোন ভুল বা অসঙ্গতি নজরে পড়লে আমাদের উপর নারাজ না হয়ে সুপরামর্শ দেয়ার বিশেষ আবেদন রইলো।

পরামর্শ দেয়ার ঠিকানা: islamijindegi@gmail.com

এতোদিন আমরা ২টি ওয়েবসাইট চালিয়েছি www.darsemansoor.com এবং www.islamijindegi.com আমরা এই দুটি ওয়েবসাইটের সমস্ত তথ্য সহ আরো অনেক জিনিস নতুন সংযোগ করে একটি ওয়েবসাইট তৈরী করেছি। সবাইকে উক্ত ওয়েবসাইটটি ভিজিট করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি।
www.islamidars.com

হযরতওয়ালা শাইখুল হাদীস মুফতী মনসূরুল হক দা.বা. এর বয়ান এবং সমস্ত কিতাব, প্রবন্ধ, মালফুযাত একসাথে ১টি অ্যাপে পেতে ইসলামী যিন্দেগী অ্যাপটি আপনার মোবাইলে ইন্সটল করুন। Play Storeএবং  App Store

মেয়েদেরকে স্কুল-কলেজে পড়ানোর বিধান

(হযরত মুফতী রশীদ আহমাদ গাংগুহী রহ.সমর্থিত একটি ফাতাওয়া)

প্রশ্নঃ ১. এই ফেতনা-ফাসাদের যুগে মেয়েদেরকে পড়া-লেখা শিখানো (যার ক্ষতিকর দিকগুলো বিজ্ঞজনদের নিকট দিবালোকের ন্যায় স্পষ্ট) মাকরূহে তাহরীমী হবে কি?

উত্তরঃ বর্তমান যুগে মেয়েদেরকে পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত করা কয়েকটি কারণে মাকরূহে তাহরীমী। কারণগুলি নিম্নরূপঃ

১. এটা সময় নষ্ট করার নামান্তর, কেননা, তার এই পড়া লেখায় না কোন পরকালীন কল্যাণ নিহিত আছে, না কোন পার্থিব কল্যাণ। মেয়েরা সাধারণত অর্থ উপার্জনের জন্য শিক্ষা অর্জন করে থাকে, অথচ শরীয়তে এর কোনোই প্রয়োজনীয়তা নেই। কেননা, তার খরচ তথা ভরণ-পোষণ ইত্যাদি তার স্বামীর দায়িত্বে, এতদসত্ত্বেও তার পড়া-লেখায় লিপ্ত হওয়াটা সময় নষ্ট করা ছাড়া আর কী হতে পারে?

হুযূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন “ব্যক্তির ইসলামের সৌন্দর্য হলো অহেতুক বিষয়াদি পরিহার করা”। (তিরমীযী শরীফ হা. ২৩১৭)

যেহেতু নারীদের জন্য এই শিক্ষা অহেতুক বিষয়, তাই হাদীসের ভাষ্যমতে একজন মুসলিম রমণী হিসাবে তার জন্য উক্ত শিক্ষা অপরিহার্য।

২. এ শিক্ষার সিলেবাসে এমন গল্প কাহিনী আর কবিতা আছে যেগুলোর মাধ্যমে নারীকে সমঅধিকার, অবাধ বিচরণ, মুক্ত ও স্বাধীন চেতনা এবং অবৈধ প্রেম-ভালবাসায় প্ররোচিত করা হয়, যা পাঠে একজন নারী ইসলাম বিদ্বেষী এবং ধর্মত্যাগী হয়ে উঠে।

তাছাড়া এই শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে নারীরা পাশ্চাত্য বেশ-ভূষা অবলম্বন করে বেহায়াপনা ও অশ্লীলতার মাধ্যমে সমাজকে কুলষিত করে। বহু পুরুষ তাদের কারণে চরিত্রহীন হয়ে পড়ে এবং আপন পরিবার পরিজন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

৩. নারীরা অতি শিক্ষিতা হয়ে বেগানা পুরুষদের নিকট পত্র প্রেরণ ও চিঠি লেখা-লেখি, ও বিভিন্ন আধুনিক উপায় অবলম্বন করে অবৈধ সম্পর্ক ও প্রেম ভালবাসায় লিপ্ত হয় যার পরিণতিতে তার ইজ্জত আব্রু লুণ্ঠিত হয় এবং পরিশেষে সে লাঞ্ছিতা, ধিক্কৃতা ও পরিত্যক্তা হয়ে যায়।

তবে মেয়েদেরকে অতীব প্রয়োজনীয় দ্বীনী মাসায়েল তথা নামায, রোযা, পবিত্রতা প্রভৃতির বিধি-বিধান শিক্ষা দেওয়া জরুরী। এগুলো শিক্ষা দেওয়ার দায়িত্ব তাদের স্বামী, পিতা, ভাইসহ পর্যায়ক্রমে অন্যান্য মাহরাম পুরুষদের উপর বর্তাবে। তারা যদি নিজেরাই উপর্যুক্ত প্রয়োজনীয় দ্বীনী মাসায়েলের উপর যথেষ্ট জ্ঞানের অধিকারী হয়, তাহলে তারাই শিক্ষা দিবে, অন্যথায় বিজ্ঞ আলেমগণের নিকট থেকে জেনে নিবে।

প্রশ্নঃ সাবালিকা ও প্রাপ্ত বয়স্কা মেয়েদেরকে বেগানা বালেগ পুরুষ এর মাধ্যমে পড়া-লেখা ইত্যাদি শিখানোর বিধান কী?

উত্তরঃ প্রথমোক্ত জওয়াব দ্বারা এ বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে গেল যে, মেয়েদের জন্য পাশ্চাত্য সিলেবাসে পড়া-শুনায় লিপ্ত হওয়া মাকরূহ, তার উপরে সেটা যদি ঘৃণিত পন্থায় তথা সরাসরি বেগানা পুরুষদের মাধ্যমে হয়, তাহলে তো সেটা কঠিন পর্যায়ের হারাম এবং সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। আল্লাহ তা‘আলা কুরআনে পাকে ইরশাদ করেন “হে নবী! আপনি মুমিন পুরুষদিগকে বলুন তারা যেন স্বীয় দৃষ্টিকে অবনত রাখে এবং মুমিন নারীদেরকে বলুন তারা যেন স্বীয় দৃষ্টি অবনত রাখে” (সূরা নূর)

লক্ষ করুন যে, নামাযের জামা‘আতে উপস্থিত হওয়া ইসলামের বড় একটি প্রতীক এবং গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাত হওয়া সত্ত্বেও উপরোক্ত ফেতনা ও অনিষ্টের কারণেই মেয়েদের জন্য জামা‘আতে শরীক হওয়া সর্বসম্মতিক্রমে মাকরূহ এবং হুযুর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর জীবদ্দশায় মহিলাদের জামা‘আতে উপস্থিত হওয়ার ব্যাপারে যেটা প্রমাণিত আছে, সেটা তাঁর জীবদ্দশার সাথেই সীমিত। হুযুর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর ইন্তেকালের পরবর্তী সময়ে এটা নিষিদ্ধ হয়ে গেছে। যথা, হযরত আয়িশা রাযি. থোকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেনঃ “নারীগণ যা (বেহায়াপনা ও অশ্লীলতা) শুরু করেছে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যদি এটা দেখতেন, তাহলে অবশ্যই তাদেরকে মসজিদে আসা থেকে বারণ করতেন, যেমন নাকি বনী ইসারাঈলের মহিলাদেরকে বারণ করা হয়ে ছিল” (বুখারী শরীফ হাঃ নং ৮৬৯)

এখন লক্ষণীয় বিষয় হলো, জামা‘আতে উপস্থিতি ও দুনিয়াবী পড়া লেখা শিখা দু‘টোর মাঝে আকাশ পাতাল ব্যবধান, তথাপি যখন প্রথমটি নিষিদ্ধ তখন দ্বিতীয়টি আরো কঠিনরূপে নিষিদ্ধ হওয়াটাই বাঞ্ছনীয় । বিশেষ করে এই ফেতনা ফাসাদের যুগে।

স্কুল-কলেজ ও ইংলিশ মিডিয়াম প্রতিষ্ঠানগুলিতে যে সিলেবাস পাঠদান করা হয়, তাতে গুনাহ ও নাফরমানী তো বটেই নিজের ঈমান আকীদাহ নিরাপদ রাখাটাই দুরূহ ব্যাপার। কারণ, মেয়েগুলোর তো প্রথমত দ্বীনী বিষয়ে নূন্যতম ধারনাও থাকে না, এমতাবস্থায় যখন তাদেরকে ইয়াহুদী-খৃস্টান কর্তৃক নির্বাচিত সিলেবাস শিক্ষা দেয়া হয়, তখন অনুরূপ আকীদা বিশ্বাস ও সংস্কৃতি তাদের মনে রেখাপাত করে ও বদ্ধমূল হয়ে যায়। সুতরাং বিবেকবানদের ভেবে দেখা উচিত এর পরিণতি কী হতে পারে?

প্রশ্নঃ হযরত জালালুদ্দীন মুহাক্কেকে দাওয়ানী রহ. এর মতানুযায়ী মেয়েদেরকে হাতের লেখা শিখা থেকে নিবৃত রাখাটা কতটুকু কল্যাণজনক? জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তরঃ জালালুদ্দীন মুহাক্কিকে দাওয়ানী রহ. এর যুগে বর্তমান যুগের মতো না কোনও স্কুল কলেজ ছিলো আর না ফেতনা ফাসাদের ছয়লাব ছিলো। তারপরেও তিনি তার যুগে মেয়েদেরকে হাতের লেখা শিখতে বারণ করেছেন। তাহলে বর্তমানের এই ফেতনা ফাসাদের যুগে মেয়েদের আধুনিক শিক্ষা থেকে দূরে রাখা কতটা জরুরী হবে!

তথাপি তখনো মেয়েদের জন্য লেখা শিখা শিখানো থেকে নিবৃত থাকাটা কল্যাণজনক ছিল। তো বর্তমানের এই ফেতনা ফাসাদের যুগে সেই নিবৃত থাকাটা জরুরী। আর

মেয়েদের প্রয়োজনীয় দ্বীনী মাসায়েল শিক্ষা দেওয়ার ব্যাপারটি হলো সম্পূর্ণ ভিন্ন। যে কথা প্রথম জবাব থেকেই সুস্পষ্ট হয়ে গেছে যে ‘সেটি শুধু জায়েযই নয় বরং জরুরী’ তবে এ ক্ষেত্রে শর্ত এই যে, সেখানে ফেতনার আশঙ্কামুক্ত, সম্পূর্ণ পর্দার সাথে শরীয়ত সম্মত পন্থায় হতে হবে। (বাকীয়াতে ফাতাওয়া রশীদিয়া, মাসআলা নং- ৯৭৯, পৃষ্ঠা নং-৫৭৩ )

প্রশ্নঃ ছেলেদেরকে কী আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত করা যেতে পারে? এই জন্য কোন শর্ত আছে কি না?

উত্তরঃ ছেলেরা কয়েকটি শর্ত সাপেক্ষে স্কুলে কলেজে পড়তে পারে।

(ক) দুনিয়াবী শিক্ষা লাভ করতে যেয়ে তাদের কোনো জরুরী আমল নষ্ট না হওয়া, যেমনঃ নামায কাযা করা, সহীহ শুদ্ধভাবে কুরআন শরীফ তিলাওয়াত থেকে মাহরূম হওয়া, ফরয পরিমাণ ইলম না শিখা ইত্যাদি।

(খ) তাদের নিয়ত থাকবে হালাল রিযিক উপার্জন ও দ্বীনের দাওয়াতের কাজ আঞ্জাম দেয়া।

(গ) এ শিক্ষা লাভ করতে গিয়ে কোনো গুনাহের সাথে জড়িত না হওয়া, যেমনঃ টাখনুর নীচে পাজামা প্যান্ট পরা, টাই লটকানো, দাঁড়ী মুন্ডানো, বিভিন্ন নেশায় জড়িত হওয়া, নভেল নাটকে অভ্যস্ত হওয়া, মেয়েদের সাথে বে-পর্দা দেখা সাক্ষাৎ করা বা তাদের সাথে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়া, অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন করা ইত্যাদি।

(ঘ) ইংরেজী সিলেবাসে যে-সব কুফুরী কথাবার্তা আছে তার থেকে নিজের দ্বীন ও ঈমানকে রক্ষা করার জন্য হক্কানী উলামাদের সুহবতে যাওয়া এবং ছুটির সময় তাবলীগে যাওয়া।

উল্লেখিত কোন শর্ত ভঙ্গ করলে তার জন্য দুনিয়াবী শিক্ষা অর্জন করা শরী‘আতের দৃষ্টিতে নাজায়িয।